রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৩

ক্ষমতা স্থায়ী করতে সংবিধান সংশোধন - বি. চৌধুরী : ছাগলের নেতৃত্বে নির্বাচন মেনে নেব, তবু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নয় - কাদের সিদ্দিকী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দৌজা চৌধুরী বলেছেন, আরেকবার সংবিধান সংশোধন করে দেশকে একটি নিশ্চিত সংঘাতের হাত থেকে রক্ষা করুন। তা করলে দেশ একটি সংঘাত থেকে রক্ষা পাবে। আর তা না করলে দেশের ইতিহাসে আপনি ধিকৃত হয়ে থাকবেন। তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে আপনি সংবিধান সংশোধন করে নিজেই প্রধানমন্ত্রী থেকে যে নির্বাচনের স্বপ্ন দেখছেন তা দেশের মানুষ এবং বিরোধী দলগুলো কোনোভাবেই মেনে নেবে না। এজন্য সরকারের এই হঠকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে তিনি দেশবাসীকে আহ্বান জানান। শনিবার বিকেলে শহরের ডিআইটি এলাকায় জাতীয় ঐক্য আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।একই অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ছাগলের নেতৃত্বে নির্বাচন হলে তা মেনে নেব। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোনো নির্বাচন মেনে নেব না। তিনি বলেন, ৪৫ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছি। কেউ যদি এক হাজার বছরও আওয়ামী লীগ করে তাহলেও নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম বা দেশের অন্য কোনো জেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আসবে না। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব আসবে গোপালগঞ্জ থেকে। শেখ হাসিনার পরিবার থেকে। সেটি হবে জয়, না হয় তার মেয়ে। আর তারা নেতৃত্বে না এলে ওই পরিবারের কুকুর-বেড়াল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবে। জাতীয় ঐক্যের নেতা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ এসএম আকরামের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, আসম আবদুর রব, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহামুদুর রহমান মান্না, মেজর (অব.) এমএ মান্নান, শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল প্রমুখ।বি চৌধুরী তার বক্তব্যে আরও বলেন, এই সরকারের প্রতি সরকারের কর্মচারীদেরই আস্থা নেই। আহাম্মক বলে এটা বুঝেও না বোঝার ভান করেছে সরকার। তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, তার মুখে এক কথা আর অন্তরে আরেক কথা। তিনি বলেন, এ সরকার ১০ টাকায় চাল আর ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার কথা বলে ক্ষমতায় এলেও তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিদ্যুতের দাম তাদের সরকারের বর্তমান সময় পর্যন্ত ১১ বার বাড়িয়েছে। শেয়ার মার্কেট থেকে টাকা লুটে নিয়ে দেশের ৩০ লাখ যুবককে পথে বসিয়ে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোতে সরকারের লোকজন লুটপাট চালিয়েছে। এ সরকারের মানুষের দাবির প্রতি কোনো সম্মান নেই। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র ত্বকী হত্যার বিচার দাবি করেন। তিনি দেশ রক্ষায় দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। ড. কামাল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ক্ষমতায় থাকতে প্রধানমন্ত্রী তার নিজের পক্ষে আইন করলেও তার কোনো মূল্য নেই। তিনি দেশ গড়তে নাসিক মেয়র আইভীর মতো আরো তিনশ’ আইভী প্রয়োজন বলেন উল্লেখ করেন। জনগণের সরকার ক্ষমতায় এলে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকল আবারও চালু করা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, দেশের জনগণই জাতীয় ঐক্যের মূল শক্তি। কারণ দেশের ১৬ কোটি মানুষই দেশের মালিক। তিনি মেধাবী ছাত্র ত্বকী হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, কী আশ্চর্য! এদেশে খুনের বিচার দাবি করতে হয়।
আসম আবদুর রব তার বক্তৃতার শুরুতেই মেধাবী ছাত্র ত্বকী হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, দেশ আজ মহা সঙ্কটে নিমজ্জিত। দুটি রাজনৈতিক দল দেশবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। তাদের হাত থেকে দেশবাসী মুক্তি চায়। কারণ দুই দলই দেশে লুটপাট চালিয়েছে। কারণ তারা ক্ষমতা ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। দেশের মানুষ এই আপদবালা থেকে মুক্তি চায় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এদের বিদায় করতে হবে। এরা গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেশকে জঙ্গিবাদের রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।’ তিনি বলেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠানে লুটপাট শেষে সরকার এবার গ্রামীণ ব্যাংকের দিকে নজর দিয়েছে। যে ড. ইউনূস বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করে সম্মানের আসনে বসিয়েছেন, তাকেই সরকার অপমানিত করেছে। সরকারের প্রতি হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আইয়ুব-ইয়াহিয়াকে যেভাবে ক্ষমতা থেকে নামানো হয়েছিল, এ সরকারকেও একইভাবে নামানো হবে। প্রয়োজনে এদেশে গণঅভ্যুত্থানে হবে। এজন্য আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন। মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। দুই দলকেই দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। সভাপতির বক্তব্যে এসএম আকরাম বলেন, দেশের জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে তৃতীয় কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন